কিছু কথা না বলাই থাক। বললেই তার গভীরতা হারিয়ে যায়। কিন্তু মনের মনি কোঠায় তাদের কোথায় ই বা সাজিয়ে রাখব। ভালবাসা, মায়া-মমতা, স্বার্থ- ষড়যন্ত্র আর দুঃখে ঘেরা এই সংসার বড়ই অসাড়। বুঝেছি আমি খুব পরিশ্রম সাধ্য সেই উপলব্ধি। ওই যাকে বলে ঠেকে শেখা। আসলে আমি তো রবিঠাকুর নই, যে প্রতি টা অশ্রুকণাকে করে তুলবো অমূল্য রতন। দুঃখ যখন আমায় আঘাত করে, বেদনায় মনটা দুমড়ে মুচড়ে ওঠে, ছাই-এর তলায় চাপা পড়া আগুনের মতো কিছু হয়তো লাইন ভেসে ওঠে এই কবি কবি মনটায়। কিন্তু যেই তারে লিখতে যাই, দিতে চাই একটি সুঠাম কায়া, তখনি অবাধ জলের ধারা সমস্ত বারণ আগ্রাহ্য করে নেমে আসে খাতার পাতায়, ধুয়ে দেয় সব আবেগ সব লেখনী। ভাষার শ্রোতজালে আটকে পড়ে সব ছন্দ-কাব্য, স্যালমন মাছের মতো অবিশ্রান্ত ভাবে সাঁতরে চলে সেই চিন্তার ছোট ছোট লার্ভা, নিজেদের অস্পষ্ট কায়াকে দৃঢ় করার প্রচেষ্টায়। কিন্তু চোখের থেকে নেমে আসা অবিরাম জলের ধারা তাদের পায়ের তলার সব জমি ধুয়ে দেয়। ওই যে বললাম, আমি রবি ঠাকুর নই, বড়ই সাধারন এক নারী। হতে পারিনি আমি চিত্রাঙ্গদা। চেয়েছিলাম কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে, কিন্তু....না পারলাম কই। মীরা ও হতে পারিনি। নেই আমার সেই অবিরল প্রেমের ধারা, নেই অপার মনের গভীরতা। আমি কিন্তু চারুলতা ও হতে চাইনি......ওই দূরবীন দিয়ে দেখতে চাইনি আমার সংসার। তাহলে আমি কে? কি হতে চেয়েছিলাম? আমি শুধু আমি.... আমার কোন বিকল্প নেই। না আমি কারো মতো, না আমার মতো কেউ। এটাই বোধহয় আমিত্বের পরিচয়।
অনামি
No comments:
Post a Comment