Thursday, August 23, 2018

ফেলে আসা দিন গুলি মোর



আমাদের ছোটবেলা ,,,সে যেন অফুরন্ত মজার ভান্ডার । কত কবিতা ছিল ,,, ঘুম পাড়ানির , গল্প শেষের , খেলার , আড়ি করার । এখনকার বাচ্ছাদের শৈশব দেখলে খুব কষ্ট হয় । পড়াশুনো, টিউটোরিয়াল , হবি ক্লাস, মোবাইল আর টিভির বাইরেও যে একটা দুনিয়া আছে সেটা যেন ওরা ভাবতেই ভুলে গেছে। এই সমস্যা আরো বেশি করে গ্রাস করছে সেইসব বাচ্ছাদের , যারা বৃহত্তর পরিবার থেকে দূরে বাবা মায়ের সঙ্গে থাকে । তারা না পায় দাদু ঠাম্মা ও অন্য আত্মীয়দের ভালোবাসা না জানতে পারে ব্যাংগোমা ব্যাংগোমি র কাহিনী। কত বড় বয়স অবধি ঠাকুমার কাছে, মায়ের কাছে দুপুরে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়েছি । বিকেলে কুমির ডাঙ্গা, চোর পুলিশ , চু কিৎকিৎ খেলা আরো কত কি। এক টাকার আলু কাবলি , দশ পয়সার হরি মটর , কারেন্ট নুন , ঘটি গরম ,,, এর সামনে কোথায় লাগে সাব ওয়ে বা কে এফ সির খাবার। আমাদের স্বল্পতা ছিল কিন্তু আনন্দের প্রাচুর্য ছিল । সাত ভাই চম্পা ছিল , সুয়োরানী দুয়ো রানী ছিল ,,, ছিল ক্ষীরের পুতুল । বন্ধুত্বে ছিল কবিতা , প্রেমে ছিল কবিতা । চুলে আলপেট কাটা ছিল , ছিল বেড়া বিনুনি আর কলা বিনুনি বাঁধা। সন্ধ্যায় শাঁখের আওয়াজ ছিল , বেষ্পতিবারে ছিল উলুর ধ্বনি। বর্ষায় কাদা মেখে ফুটবল খেলা ছিল , সরস্বতী পূজার প্রথম শাড়ি পরা আর লুকিয়ে চিঠি দেওয়া ছিল। সময় যেন ওই সমুদ্রের জল,,মুঠো ভরে ধরতে গেলে হাতে থাকে কিছু বালি আর ঝিনুক । ওই বালি ঝিনুক হচ্চে আমাদের স্মৃতিগুলো , সময়ের চালুনি চুঁয়ে জমা হয়েছে জীবনের হিসেবের খাতায় ।একটা গল্প শেষের কবিতা দিয়ে ইতি টানছি আমার , আমাদের  রূপকথার

"আমার কথাটি ফুরালো
নটে গাছটি মুড়ালো।
কেন রে নটে মুড়ালি
গরু কেন খায়
কেন রে গরু খাস
রাখাল কেন চরায় না
কেন রে রাখাল চরাস না
বউ কেন ভাত দেয়না
কেন রে বউ ভাত দিস না
ছেলে কেন কাঁদে
কেন রে ছেলে কাঁদিস
পিঁপড়ে কেন কামড়ায়
কেন রে পিঁপড়ে কামড়াস
কুটুস কুটুস কামড়াবো
গত্তের ভিতর ঢুকবো
কুটুস কুটুস কামড়াবো
গত্তের ভিতর ঢুকবো।।"

অনিন্দিতা নস্কর

No comments:

Post a Comment