Wednesday, April 25, 2018

#justice

I really don't understand why do we need a name, a religion or a caste to rise for protest. Why we should wait for Asifa to die ....why can't we stand up before that...Asifa, not the first one to be brutalized...but we wait for the time and let her die ... In surat, an unidentified girl died of 86 wounds n sexual assault ...a lill girl got molested inside the classroom... a woman gang-raped...but none standing up for them .. neither taking names ...be it a Dalit or Muslim ... let's make it a piece of news...why why...the pain is the same ...for the victim and the parents ...and the culprits roam free... We didn't learn anything from Nirbhaya ..that's why Asifa and so many others dying.... If u are standing up pls do continue to do that ... don't wait for a name..Stand up before it is too late. Stand up before those creepy hands snatch away your dear ones ...It's time to arise and protect our children, our future.

#justiceforAsifaandothers

Monday, April 23, 2018

আমি অমিতা বলছি


********************

প্রাক স্বাধীনতা যুগে জন্মেছি। মিছিল, বিদ্রোহ, বিপ্লব আর বোমারু বিমানের আসা যাওয়ায় কেটেছে আমার শৈশব। বাবা মা থাকতেন গ্রামের বাড়িতে । আমি আর আমার বাকি তিন ভাই বোন দাদু ঠাকুমা আর কাকাদের সাথে ভবানীপুর এর বাড়িতে থাকতাম। দাদু আবগারি অফিসে কাজ করতেন , কাকাদের কেউ কলেজ পড়ুয়া তো কেউ কর্ম প্রত্যাশী। এরই মাঝে গোরাদের যখন ধরপাকড় বেড়ে যায় , দেখি কাকারা কোথায় যেন চলে যায় । ঠাকুমার রাত গুলো আমাদের আঁকড়ে ধরে কেটে যায়। পড়াশুনো করতে আমার বরাবর ভালো লাগতো। ভর্তি হলাম ভবানীপুর গার্লস স্কুলে। দুই বেনী ঝুলিয়ে বোনের হাত ধরে স্কুলে যেতাম।  পাড়ার ছেলে মেয়েদের সাথে মিলে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা, ঝুলন সাজানো , সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা আর ও কত কিছু করতাম । দিনের শেষে বাড়ির ছাদে বসে পাড়ার কোনো ঠাকুমার কাছে গল্প শোনা , ছুটির দুপুরে সবাই মিলে আচার খাওয়া  -- আজ এইসব মনে পড়লে মনে অনাবিল আনন্দ জাগে আবার অবাধ্য চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে যায়। যাইহোক , আমাদের জীবন এর ছন্দপতন হল ,,, দাদুর কাছে আসলো চিঠি। আমাদের গ্রামের বাড়িতে গোরারা ছাউনি করবে । কি কান্ড , তাহলে গ্রামের মানুষের দুর্গতির সীমা থাকবে না। বাবা, দাদু , কাকারা সবাই চিন্তিত। তখন দাদুর অফিসের এর এক গোরা সাহেবের পরামর্শ এ আমরা সবাই গ্রামে ফিরে গেলাম। গোরাদের অফিসে দাদু চিঠি পাঠালেন , যাতে আমাদের ভিটে ছাড়া হতে না হয়। পরিদর্শন করতে এসে যখন দেখলো আমরা সবাই ওই বাড়িতে আছি ওরা দাদুর আর্জি মেনে নিল। শুনতে খুব সহজ মনে হলেও সেদিনগুলো আমাদের কাছে পাহাড় সমান মনে হয়েছে। সব মিটে যেতে আবার ফিরে এলাম শহরে। আবার স্কুল। তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি , সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে ঠাকুমার সাথে কাজ করছি, আমার সেজ কাকা এক হাঁড়ি মিষ্টি নিয়ে ঢুকলেন । হঠাৎ জানতে পারলাম আমার বিয়ের কথা চলছে। সেকি তাহলে আমার পড়া শুনো।
যথা নিয়মে পাত্রপক্ষ দেখে বিয়ের নির্ঘন্ট স্থির করে গেলেন। দুই বিনুনি দুলিয়ে স্কুলে যাওয়ার পড়লো ইতি।
থাকতাম ভবানীপুর এর মত শহুরে জায়গায় , বিয়ে হল মাটিকলে । এয়ারপোর্টের কাছে হলেও অজ গ্রাম। এমবাসাডার এ চেপে বিদায় হয়ে আসলাম । কিন্তু ওই গ্রামে ঢোকার মুখে এসে গাড়ি দাঁড়িয়ে গেল । নতুন বউ, অজানা অচেনা পরিবেশে এক গলা ঘোমটা দিয়ে স্বামীর সাথে শুরু হল আমার দীর্ঘ পথ চলা।
*********
গ্রামের এক প্রান্তে মায়ের থান। আগে ওখানে গিয়ে  প্রনাম করে তারপর নতুন বউয়ের শ্বশুর বাড়িতে প্রবেশ। সব মেয়েই কম বেশি ভয়ে থাকে নতুন শাশুড়ি কে নিয়ে । কিন্তু আমার শাশুড়ি মা সেই ভীতি প্রদর্শনের কোনো চেষ্টা করেননি, বরঞ্চ একটি নতুন মা পেয়েছিলাম তাঁর মধ্যে। গ্রামের এমনি হাল ছিল যে জুতো বগলদাবা করে বা পারলে মাথায় করে নিয়ে বেশ কিছু রাস্তা চলতে হতো। তারপর নিকটবর্তী পুকুরে পা ধুয়ে জুতো পরে অফিস যেতে হতো আমার স্বামী ও অন্যান্য সবাইকে। গ্রামে আমি ছিলাম একমাত্র পড়া লেখা জানা বউ। আমার স্বামী হোমিওপ্যাথি ডাক্তারি করতেন অবসর সময়ে। আমিও শিখেছিলাম বেশ। গ্রামে কারো জ্বর হলে বিশেষত মহিলা যদি হন, আমার ডাক পড়তো। থার্মোমিটার কে গ্রামের বাসিন্দারা বলতো জ্বর মাপা কাঠি।
গ্রামে থাকলেও আমার স্বামী প্রগতিশীল ছিলেন তাই ওই দূর গ্রামে গিয়ে ও আমার মনের জানালা বন্ধ হয়ে যায়নি, বরঞ্চ আরো নতুন কিছু শেখার সুযোগ হয়েছিল। শখ করে আমার নাম রেখেছিলেন অমিতপ্রভা । ভালোবাসার একটুকু ছোঁয়া লাগে ।
********

আমার শাশুড়ি মা সব সময় বলতেন দু মুঠো চাল বেশি নেবে বউমা। কেউ যদি আসে অভুক্ত না যায় । সাত সকালে উঠে বিশাল এক হাঁড়ি ভাত, ডাল আর কোন একটা তরকারি আর মাছ বানানো হতো । যারা অফিস , স্কুলে যাবে তারা খেয়ে বেরিয়ে গেলে মাঠে যারা কাজ করতো তাদের জন্য খাবার পাঠানো হতো। আবার দুপুরের রান্নার প্রস্তুতি চলতো। অনেক সময় হতো কি , অনাহুত অতিথির সংখ্যা এত বেশি হতো আমাদের মহিলাদের জন্য ভাত ছাড়া কিছু বেঁচে থাকত না। তাই বলে কি আমরা অভুক্ত থাকতাম, কদাপি না। মা মাচায় ফলে থাকা পটল, সিম , ঝিঙে যা পেতেন নিয়ে প্রায় নিভন্ত উনুনে দিয়ে দিতেন । আমরা স্নানাদি সেরে যতক্ষন এ আসতাম সেই সবজিগুলো পুড়ে ভর্তার উপযোগী হয়ে যেত । ভাতে সেই পোড়া সবজি  সর্ষের তেল কাঁচা মরিচ পেঁয়াজ দিয়ে মেখে ,,,, থাক না আস্বাদন টা জিভের ডগায় লেগে থাকুক।
আবার কোনো সময় , চুবাড়ি তে একটু ভাত ছড়িয়ে পুকুরের শেষ ধাপে রেখে দেওয়া হতো। কিছু ক্ষণ পর এক ঝটকায় তুলে নিলেই চুবাড়ি তে পাওয়া যেত ছোট চিংড়ি, চিতি কাঁকড়া, ছোট মাছ । সব গুলোকে এক সঙ্গে কেটে বেছে নুন হলুদ , কাঁচা মরিচ, কাঁচা সর্ষের তেল , একটু আলু কুচি , পেঁয়াজ কুচি দিয়ে মেখে  উনুনে বসিয়ে দেওয়া হতো। সেই স্বাদ আর পাই না । সেই দিনগুলোতে অনেক কষ্ট ছিল। বোতাম টিপলেই ফ্যান চলতো না , আলো জ্বলত না। জল আনতে কাঁখে ঘড়া নিয়ে আধ মাইল হাটতে হতো , বিকেল বেলায় নিয়ম করে লন্ঠন পরিষ্কার করতে হতো। সাপের ভয় , ভাম , শেয়ালের ভয় ও  ছিল খুব , কিন্তু ,,,, কোথায় একটা শান্তি ছিল। গ্রামের বউরা মিলে বাঁশ বাগানে গিয়ে অরণ্য ষষ্ঠী পালন করা , হইহই করে ইতু পুজো করা ,,,,কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।
**************

মনে পড়ে, আমার ছেলের সেই ছুটতে ছুটতে মা মা করে চিৎকার । ভয় পেত ,,,ওই উঁচু বাঁশের ঝাড়ের মাথা গুলো যখন হওয়ায় দুলতো ,,,খুব ভয় পেত ।আর আমিও ওকে আশ্বাস দিতে ওর নাম ধরে ডাকতাম ।  এই ভাবেই কেটে যাচ্ছিল দিন । কিন্তু বিধাতা আমাদের নিয়ত পরীক্ষা নিতে থাকেন।
এরই মাঝে হারিয়েছি একটি সন্তান ,,,মস্তিষ্কের জ্বরে । ডাক্তার দেখিয়েও কিছু করতে পারিনি। বুকের মাঝে সেই ছয় মাসের সন্তানের জন্য আজো রক্ত ঝরে । শোক নিয়ে পথ চলা যায় না । তাই জীবন এগিয়ে চলে আপন স্রোতে। শাশুড়ি মাকে এক সন্ধ্যায় চন্দ্র বোড়া সাপে কাটলো। সবাই ছুটে এলো, কোন ওঝা ভালো ঝাড়তে পারে তাকে ডেকে পাঠানো হল । সেদিন আমার স্বামী মাইনে পেয়েছিলেন, পকেটে টাকা নিয়ে আর আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রতি অগাধ আস্থা নিয়ে মা কে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলেন । কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস , আমার বড় ভাসুর ও গ্রামের বাকি মাতব্বররা নিয়ে যেতে দিলো না মা কে । রাত গড়িয়ে ভোর হল কিন্তু নিভে গেল একটা সুন্দর জীবনদীপ। আমার স্বামীর আক্ষেপ আজ ও আছে টাকা থাকা সত্ত্বেও মা কে না বাঁচাতে পারার । আমিও তার ভাগিদার । এই জীবনের শেষের সাথে সাথে সেই আক্ষেপের ও শেষ হবে।
মায়ের যাবার পর ধীরে ধীরে একান্নবর্তী সংসারে যেন ফাটল ধরলো। সেই ফাটল দিয়ে বিভেদের নোনা জল ঢুকে দুই ভাই আর তাদের সংসার আলাদা হল , আলাদা হল পথ চলা।
#ঠাম্মারগল্প
অনিন্দিতা