প্রিয় পাবলো,
কেমন আছো তুমি ? জানি তুমি খুব ব্যস্ত। তোমার আঁকা আজ বিশ্ববন্দিত। কত জায়গায় তোমার চিত্র প্রদর্শনী হচ্ছে । তোমার চারপাশে কত মানুষের ভিড়। সেই ভিড়ের মাঝে আমাকে কি কোনোদিন খুঁজেছো তুমি? তোমার ম্যাডলিন , তোমার প্রথম মডেল কে , তুমি কি বিস্মৃতির গলিতে ছেড়ে এসেছো, পাবলো? তোমাকে পেয়েও না পাওয়ার কষ্টে পড়ে থেকেছি আমি মাটি কামড়ে , বাঁচার লড়াইয়ে। নখের আঁচড়ে লিখেছি আমার বিরহ যাতনা-
বেণীমাধব, ও বেণীমাধব
কত'ই না ডেকেছি তোমায়,
এই নামের আড়ালে
লুকিয়ে আছে তোমার পরিচয়।
পারি না তোমায় তোমার নামে ডাকতে,
ভয় হয় যদি লোকে জেনে যায়।
বেণীমাধব, তাই দিলাম তোমার নাম,
হইনি আমি পাড়ার সেলাই দিদিমনি
দিয়েছি আমি পাড়ি সুদূরের পথে
মনের গভীরে তলিয়ে গেছ তুমি
ডুব দিয়ে তুলে আনি কিছু স্মৃতির মণি
নেই তার দাম কারো কাছে,
তবু যদি জানতাম তুমি আছো আমার'ই পাশে।
না তুমি, না তোমার ছায়া
সব'ই রইল অধরা
জীবনের গোধূলি বেলায়
যদি হয় আর একবার দেখা,,,
বেণীমাধব, একটি বার সব কিছু ভুলে
সব বেড়াজাল ভেঙ্গে একবার মিলিয়ে দাও
তোমার আমার জীবন রেখা
বাকী টুকু থাক নাই'বা হলো আঁকা।
জীবনের অনেকটা পথ অতিক্রম করে এসেছি। বর্তমান জীবন অনেক দিয়েছে আমায় ,,,টাকা পয়সা, সোনার গয়না , দেশে বিদেশে বেড়াতে যাওয়া ,,,,সামাজিক প্রতিপত্তি - আজ থেকে তিরিশ বছর আগে যা তোমার ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল । তুমি পাত্র হিসেবে আমার মায়ের চোখে গ্রহণীয় হয়ে উঠতে পারোনি পাবলো। তোমার স্বপ্ন মেদুর চোখ , গ্রিক দেবতার মতো চেহারা আমাকে পাগল করেছিল , কিন্তু আমার মায়ের চোখে শুধুই ছিল অশনি সঙ্কেত। থাক আজ সেসব কথা। আসলে মনের মধ্যে আজ আমার কথার ফুলকি । তোমায় উজাড় করে না বললে যে আমার ভালোবাসার গল্প অধরাই থেকে যাবে। ইছামতির তীরে বসে তোমার আঁকা সেই ছোট্ট বাচ্চার চারকোল পোট্রেট আজও আছে আমার কাছে । ভেবেছিলাম তোমার সাথে বাঁধবো যখন ঘর , সাজাবো যতনে ,,,,চিকনের পর্দা , পোলকা ডটের চাদর , অগুরুর গন্ধ ,,,একটা ফুলদানি রজনীগন্ধার তোড়ায় সাজানো,,,,,শুধু তোমার আসার অপেক্ষা। তোমার ঘামে ভেজা শরীরের গন্ধ , সিগারেটের গন্ধ - সব কিছুতেই ভালোবাসা ,ভালোবাসা।
উফফ দম টা যেন বন্ধ হয়ে আসছে পাবলো। আমার হাতে সময় বড়ই কম। তোমাকে অনেক কথা বলার ছিল
আজো তোমার অপেক্ষায় গুণে যাই দিন।
জানতে চাও কোথায় আছি...
******
ছেড়ে আমি যায়নি তোমায়
শুধু নদীর স্রোত ছিল প্রতিকূল
সময়ের আলিঙ্গনে জমেছে ধূল।
ভুলে আমি যায়নি তোমায়
রঙিন করেছি মন তোমার রঙে ,,,,,,।
তোমার নিশ্বাস আজো পাই ঠিক
আমার কানের পাশে
শিহরে ওঠে মন, শরীর-প্রাণ
তোমায় ভুলে যায়নি ,,,,, ।
সব ধূলো মুছে দেব--- যদি তুমি আজো আসো
দু-হাত বাড়িয়ে দেব--- জড়াবো আমার বাহুপাশে।
স ্স্কারের বেড়াজাল করেছে রাস্তা পিচ্ছিল
যত'ই তুমি বাড়াও হাত
পৌঁছাতে দেবেনা আমায় ওরা
রাস্তা বড়'ই সঙ্কিল।
না না ,,,,ছন্দ মিলছে না । তাল কেটে যাচ্ছে কথার । সময় নেই ,,,আর সময় নেই । আচ্ছা পাবলো , আজো কি তুমি আমায় ভালোবাসো?! নাহ উত্তরের অপেক্ষা করিনা। কারন জানি যখন তুমি এই চিঠি পড়বে ততক্ষনে আমি সমস্ত জাগতিক মায়া কাটিয়ে পোঁছে যাবো না-মনখারাপ এর দেশে। জানো পাবলো, এই মেশিনগুলো আমায় যে একমুঠো শ্বাস ভিক্ষে দিচ্ছে ওরাও জানে আমার ভিতরটা কত ফাঁকা। তাই সারাদিন পাম্প করেও ফুসফুসে অক্সিজেন পৌঁছায় না । হারিয়ে যায় মাঝ পথে। তোমায় আমার মনের না বলা কথা আজ জানাতে পেরে অনেক হালকা লাগছে । নিজেকে মনে হচ্ছে রাস্তা শেষে আস্তানায় ফেরা কোনো ক্লান্ত পথিক
" 'Tis very sweet to look into the fair
And open face of heaven,—to breathe a prayer
Full in the smile of the blue firmament.
Who is more happy, when, with heart's content,
Fatigued he sinks into some pleasant lair
Of wavy grass, and reads a debonair
And gentle tale of love and languishment?
Returning home at evening, with an ear
Catching the notes of Philomel,—an eye
Watching the sailing cloudlet's bright career, "
কিটস তোমার বড় প্রিয় ছিল । তাই তাঁকে ই স্মরণ করে বলছি বিদায় বন্ধু, সখা , প্রিয়তম আমার । যদি হয় দেখা অন্য খানে, অন্য কোনো জগতে ,,সেই আশায় বাঁধে মন।
ভালো থেকো ,
ইতি,
তোমার ,শুধুই তোমার ম্যাডলিন
কেমন আছো তুমি ? জানি তুমি খুব ব্যস্ত। তোমার আঁকা আজ বিশ্ববন্দিত। কত জায়গায় তোমার চিত্র প্রদর্শনী হচ্ছে । তোমার চারপাশে কত মানুষের ভিড়। সেই ভিড়ের মাঝে আমাকে কি কোনোদিন খুঁজেছো তুমি? তোমার ম্যাডলিন , তোমার প্রথম মডেল কে , তুমি কি বিস্মৃতির গলিতে ছেড়ে এসেছো, পাবলো? তোমাকে পেয়েও না পাওয়ার কষ্টে পড়ে থেকেছি আমি মাটি কামড়ে , বাঁচার লড়াইয়ে। নখের আঁচড়ে লিখেছি আমার বিরহ যাতনা-
বেণীমাধব, ও বেণীমাধব
কত'ই না ডেকেছি তোমায়,
এই নামের আড়ালে
লুকিয়ে আছে তোমার পরিচয়।
পারি না তোমায় তোমার নামে ডাকতে,
ভয় হয় যদি লোকে জেনে যায়।
বেণীমাধব, তাই দিলাম তোমার নাম,
হইনি আমি পাড়ার সেলাই দিদিমনি
দিয়েছি আমি পাড়ি সুদূরের পথে
মনের গভীরে তলিয়ে গেছ তুমি
ডুব দিয়ে তুলে আনি কিছু স্মৃতির মণি
নেই তার দাম কারো কাছে,
তবু যদি জানতাম তুমি আছো আমার'ই পাশে।
না তুমি, না তোমার ছায়া
সব'ই রইল অধরা
জীবনের গোধূলি বেলায়
যদি হয় আর একবার দেখা,,,
বেণীমাধব, একটি বার সব কিছু ভুলে
সব বেড়াজাল ভেঙ্গে একবার মিলিয়ে দাও
তোমার আমার জীবন রেখা
বাকী টুকু থাক নাই'বা হলো আঁকা।
জীবনের অনেকটা পথ অতিক্রম করে এসেছি। বর্তমান জীবন অনেক দিয়েছে আমায় ,,,টাকা পয়সা, সোনার গয়না , দেশে বিদেশে বেড়াতে যাওয়া ,,,,সামাজিক প্রতিপত্তি - আজ থেকে তিরিশ বছর আগে যা তোমার ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল । তুমি পাত্র হিসেবে আমার মায়ের চোখে গ্রহণীয় হয়ে উঠতে পারোনি পাবলো। তোমার স্বপ্ন মেদুর চোখ , গ্রিক দেবতার মতো চেহারা আমাকে পাগল করেছিল , কিন্তু আমার মায়ের চোখে শুধুই ছিল অশনি সঙ্কেত। থাক আজ সেসব কথা। আসলে মনের মধ্যে আজ আমার কথার ফুলকি । তোমায় উজাড় করে না বললে যে আমার ভালোবাসার গল্প অধরাই থেকে যাবে। ইছামতির তীরে বসে তোমার আঁকা সেই ছোট্ট বাচ্চার চারকোল পোট্রেট আজও আছে আমার কাছে । ভেবেছিলাম তোমার সাথে বাঁধবো যখন ঘর , সাজাবো যতনে ,,,,চিকনের পর্দা , পোলকা ডটের চাদর , অগুরুর গন্ধ ,,,একটা ফুলদানি রজনীগন্ধার তোড়ায় সাজানো,,,,,শুধু তোমার আসার অপেক্ষা। তোমার ঘামে ভেজা শরীরের গন্ধ , সিগারেটের গন্ধ - সব কিছুতেই ভালোবাসা ,ভালোবাসা।
উফফ দম টা যেন বন্ধ হয়ে আসছে পাবলো। আমার হাতে সময় বড়ই কম। তোমাকে অনেক কথা বলার ছিল
আজো তোমার অপেক্ষায় গুণে যাই দিন।
জানতে চাও কোথায় আছি...
******
ছেড়ে আমি যায়নি তোমায়
শুধু নদীর স্রোত ছিল প্রতিকূল
সময়ের আলিঙ্গনে জমেছে ধূল।
ভুলে আমি যায়নি তোমায়
রঙিন করেছি মন তোমার রঙে ,,,,,,।
তোমার নিশ্বাস আজো পাই ঠিক
আমার কানের পাশে
শিহরে ওঠে মন, শরীর-প্রাণ
তোমায় ভুলে যায়নি ,,,,, ।
সব ধূলো মুছে দেব--- যদি তুমি আজো আসো
দু-হাত বাড়িয়ে দেব--- জড়াবো আমার বাহুপাশে।
স ্স্কারের বেড়াজাল করেছে রাস্তা পিচ্ছিল
যত'ই তুমি বাড়াও হাত
পৌঁছাতে দেবেনা আমায় ওরা
রাস্তা বড়'ই সঙ্কিল।
না না ,,,,ছন্দ মিলছে না । তাল কেটে যাচ্ছে কথার । সময় নেই ,,,আর সময় নেই । আচ্ছা পাবলো , আজো কি তুমি আমায় ভালোবাসো?! নাহ উত্তরের অপেক্ষা করিনা। কারন জানি যখন তুমি এই চিঠি পড়বে ততক্ষনে আমি সমস্ত জাগতিক মায়া কাটিয়ে পোঁছে যাবো না-মনখারাপ এর দেশে। জানো পাবলো, এই মেশিনগুলো আমায় যে একমুঠো শ্বাস ভিক্ষে দিচ্ছে ওরাও জানে আমার ভিতরটা কত ফাঁকা। তাই সারাদিন পাম্প করেও ফুসফুসে অক্সিজেন পৌঁছায় না । হারিয়ে যায় মাঝ পথে। তোমায় আমার মনের না বলা কথা আজ জানাতে পেরে অনেক হালকা লাগছে । নিজেকে মনে হচ্ছে রাস্তা শেষে আস্তানায় ফেরা কোনো ক্লান্ত পথিক
" 'Tis very sweet to look into the fair
And open face of heaven,—to breathe a prayer
Full in the smile of the blue firmament.
Who is more happy, when, with heart's content,
Fatigued he sinks into some pleasant lair
Of wavy grass, and reads a debonair
And gentle tale of love and languishment?
Returning home at evening, with an ear
Catching the notes of Philomel,—an eye
Watching the sailing cloudlet's bright career, "
কিটস তোমার বড় প্রিয় ছিল । তাই তাঁকে ই স্মরণ করে বলছি বিদায় বন্ধু, সখা , প্রিয়তম আমার । যদি হয় দেখা অন্য খানে, অন্য কোনো জগতে ,,সেই আশায় বাঁধে মন।
ভালো থেকো ,
ইতি,
তোমার ,শুধুই তোমার ম্যাডলিন