" I don't know if we each have a destiny, or if we're all just floatin' around accidental-like on a breeze, but I, I think maybe it's both. Maybe both is happenin' at the same time. I miss you Jenny. If there's anything you need. I won't be far away."
বসার ঘরে লাগানো 56 ইঞ্চির LED টিভিতে ফরেস্ট গামপ দেখতে দেখতে বন্যা আড় চোখে পাশের আয়নাটার দিকে তাকালো,,, সেখানে স্বপ্নীলের প্রতিফলন পড়েছে । সিনেমা দেখায় কোনো উৎসাহ নেই তার,,,, স্টাডিরুমটাই নীলের জগৎ । আয়না দিয়ে দেখতে দেখতে বন্যা বুঝতে পারলো ,,,, এই মানুষটা বড় দূরের । তারা যেন দুটো বিপরীত মেরু ,,, নীল যেখানে শান্ত ধীর ,,নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বেরোতে পারেনা। তার সবকিছুই যেন হিসেব করে রাখা । সেখানে বন্যা , তার নামের মতোই অবাধ , অবাধ্য ,,,প্রচন্ড স্রোতে ভেসে চলাতেই তার জীবনের সার্থকতা। বন্যার আশে পাশে যেন এক এনার্জির বলয় আছে ,,,, অনর্থক চাওয়া পাওয়ার বেড়াজালে বাঁধতে চায় না তার মন। বোহেমিয়ান জীবন তাকে নিরন্তর হাতছানি দিয়ে ডাকে। বন্যার মনে হয় সে যেন কোনো এক মায়াজালে ক্রমশ বন্দী হয়ে যাচ্ছে। তার মুহূর্তে মনে পড়ে যায় চারুলতা সিনেমার একটা দৃশ্য ,,,যেখানে চারু জানলার খড়খড়ি দিয়ে দূরবীন লাগিয়ে প্রস্থানরত তার স্বামীকে লক্ষ্য করছে । হ্যা ,, ঠিক একই ভাবে বন্যা আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে নীলকে আপন করে নেবার ,,,,,, হঠাৎ ই মোবাইলে আসা ইমেল নোটিফিকেশনের আওয়াজে তার চিন্তার স্রোত থেমে যায় ,,,,, তাড়াতাড়ি মোবাইলে চেক করে মেল টা ,,,,, কপালে ভাঁজ পড়লেও ঠোঁটের কোণে ধরে হাসির রেখা ।
স্টাডি রুমের দরজায় যখন বন্যা এসে দাঁড়ালো , স্বপ্নীলের মনে হলো এ সে কাকে দেখছে? তারই সাদা রঙের বুশ শার্ট টা পরেছে বন্যা , দু একটা বাটন ইচ্ছাকৃতভাবেই খোলা রয়েছে। নিচের গোলাপি অন্তর্বাস হালকা করে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। নীল যেন নতুন করে আবিষ্কার করলো তার ছয় মাস আগে বিয়ে করা বৌ'কে। মন্ত্রমুগ্ধের মতো এগিয়ে গেল সে বন্যার দিকে। কিন্তু বন্যা আজ ছলনাময়ী। স্বপ্নীল তাকে ধরতে পারার আগেই সে দৌড়ে নিজেদের বেডরুমে চলে গেল। স্বপ্নীলও যেন কোন এক আদিম রহস্যের টানে তার পিছনে এগিয়ে গেল । আজ বেডরুম টাও অচেনা লাগছে,,,, চারিদিকে ছোট ছোট জলপাত্র ,, তাতে গোলাপের পাপড়ি আর মোমবাতি ভাসছে । এলেক্সা পিঙ্ক ফ্লয়েড বাজাচ্ছে খুব হালকা আওয়াজে । মৃদু রাত আলোয় বন্যাকে মনে হচ্ছে কোনো এক মায়াবিনী ,,,, যে তৃষ্ণানার্ত হয়ে আছে প্রেম সুধার জন্য। নাহ আর নিজেকে সংযত রাখতে পারলো না ,,, স্বপ্নীল সেই আদিম রিপুর দ্বারা তড়িতাহত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লো বন্যার উপর। তার কোমল ঠোঁট দুটো কে নিজের ঠোঁট দিয়ে নিষ্পেষিত করতে লাগলো। বন্যার মুখে ঠোঁটে একটা মৃদু গাঁজার গন্ধ ,,,, স্বপ্নীল যেন মহুয়া খেয়ে মত্ত হাতির মত হয়ে উঠলো। একটানে বিবসনা করে দিল বন্যাকে। রাত আলো যেন বন্যার শরীরকে ছুঁয়ে পিছলে নেমে যাচ্ছে। দুটো শরীর পৃথিবীর আদিমতম খেলায় মেতে উঠলো। আদরে আদরে ভরিয়ে দিল বন্যাকে ,,,,,, ফিসফিস করে তার কানে বললো ,,,এ রাতের যেন শেষ না হয় । খেলায় মেতে ওঠে বন্যাও। হঠাৎ ই তার মনে পড়ে যায় বছর খানেক আগের এমন একটা দিন ,,,, সাগ্নিক তার উদ্দাম ভালোবাসায় সিক্ত করে দিচ্ছিল তাকে। কিন্তু অনভিজ্ঞ বন্যা সে ভালোবাসাকে গ্রহণ করতে পারেনি। সাগ্নিকের হাত আর ঠোঁট যখন তার শরীরের প্রতিটা কোণকে খুঁজে পেতে চাইছিল ,,, বিহ্বল বন্যা দূরে সরিয়ে দিয়েছিল তার প্রেমিককে। অপমানিত ,প্রতারিত বোধ করেছিল সাগ্নিক ,,,,, দূরে অনেক দূরে সরে গেছিল তারা। আজকের এই শরীরী খেলায় কেন মনে পড়ছে সাগ্নিক কে ,,,, চোখের কোল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। স্বপ্নীল ভাবে কামাতুর বন্যার প্রেমাশ্রু । বন্যা আরো বেশি করে খেলায় মেতে ওঠে ,,,ভুলিয়ে দিতে চায় তার অতীত ।
খেলা শেষে ঘুমিয়ে পড়ে নীল ,,,,, হালকা আলোয় স্বামীর মুখটা দেখে বন্যা। চুল গুলোকে সরিয়ে দেয় মুখের উপর থেকে ,,, একটা আলতো চুমু খেয়ে নিজেকে আলিঙ্গন মুক্ত করে উঠে দাঁড়ায়। একটা নাইট গাউন জড়িয়ে নেয় তার নগ্ন দেহে র উপর। তারপর ড্রয়ার থেকে একটা সিগারেট বার করে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায়।শহরের এদিকটায় শুধুই হাইরাইজের ভিড় । বন্যাদের ফ্ল্যাট টা একুশ তলায় ,,,, এত উঁচুতে উঠে নিচের মানুষগুলোকে যেন পিঁপড়ের মতো লাগে। উদ্যাম হাওয়া বন্যার চুল গুলোকে এলোমেলো করে দেয়। সিগারেটের ধোঁয়ায় মনের নানা চিন্তা গুলোকে ভাসিয়ে দিতে থাকে। মনে মনে ভাবতে থাকে কাল কিভাবে নীল কে জানাবে তার চাকরির খবর টা ,,,, সে যে ওড়ার টিকিট পেয়ে গেছে । এই সংসার তার জন্য নয় ,,, তার ভিতরের যাযাবর সত্ত্বা তাকে টিকতে দেবে না ঘরে। তার মন চায় পৃথিবীটাকে জানতে দেখতে,,, মানুষের জন্য কিছু করতে। এই চাকরিটা তার অনেকটাই স্বপ্ন পূরণ করবে। নাহ ,,, এই সুযোগ ছেড়ে দিলে চলবে না । মন শক্ত করে তাকে বলতেই হবে ,,,, সিগারেট এ শেষ টান টা দিয়ে ঘরে এসে পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকা নীল এর পাশে সেও শুয়ে পড়ে। কালকের ভোরের অপেক্ষা শুধু ,,,,