Thursday, February 8, 2018

কিছু মনের কথা

আজ সকালে ছেলের জন্য ডিম পাউরুটি বানাচ্ছিলাম। হঠাৎ একটা ডিমে বেশ কিছুটা রক্ত কণিকা দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেল। সেই ডিম টা ডিসকার্ড করতে গিয়ে মনে পড়ল , এগুলো অনেকেই খায় , এবং ভ্রূণ সমেত ডিম কিছু জায়গায় ডেলিকেসি। এতে খারাপ লাগার কিছু নেই। আমার ব্যক্তিগত পছন্দ সেটা একান্তই আমার। যার যেটা ভালো লাগে সে সেটাই খাবে বা পোষ্ট করবে। কিন্তু কিছু লোক আছেন যারা মরাল পুলিশিং করতে ওস্তাদ মানুষ। ইস এটা কেউ খায় ,,,এমন নাক শিটকানো টাইপ আরকি। এক টা ছোট্ট ঘটনা বলি, তখন আমি সদ্য , সারদা মিশন কলেজ থেকে পাস করে দিল্লিতে জামিয়া মিলিয়া কলেজে ভর্তি হয়েছি । দুটো কলেজের পরিবেশে খুবই পার্থক্য। কিন্তু , জামিয়াতে আমি কোনদিন কোন ধর্মীয় টানাপোড়েন এর সম্মুখীন হয়নি। আমার কলেজের পাশে কিছু খাবার দোকান ছিল যারা দারুন বিরিয়ানি বানাতো। বাঙালি পেট , বিরিয়ানি ছাড়ি কি করে। চিকেন ও মটন বিরিয়ানি দুটোই খেতাম । হঠাৎ একদিন জানলাম মটন বিরিয়ানি টা আসলে গরুর মাংসের। তার আগে আমি কোনদিন খাইনি। এবার পড়লাম বিপাকে, যাঃ তাহলে কি আমার জাত গেল?  জানেন , আয়নায় অনেক বার নিজেকে দেখে বোঝার চেষ্টা করলাম, ওই জাত যাবার ব্যাপারটা ঠিক কি হয়? শেষে আমার ঠাকুমাকে শুধালাম, ঠাম্মা আমার কি জাত গেছে? আমি কি আর পুজো করতে পারবোনা? ঠাম্মা আদর করে বলল, জাত টা কি একটা জামা যে নোংরা হলে ছেড়ে ফেলবি। জাত টা হচ্ছে তোর পরিচয়, যে তুই কত বড় মানুষ। তোর মনুষ্যত্ব বোধে তোর জাত চেনা যাবে। আর ঠাকুর কে মন থেকে পুজো দিস, আড়ম্বরে ঠাকুর কে পাওয়া যায় না। সত্যি কথা, কই ঠাকুর কে আমি তো কোন মন্দিরে পাইনি, পেয়েছি তাঁকে প্রকৃতিতে, মানুষের মধ্যে। কেদারনাথ এর হিমশীতল রাতে অনুভব করেছি তাঁকে । আজ তাই হাসি পায় নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্য। নিজেকে ঠিকঠাক মানুষ করে তুলতে হবে, নিজের সন্তানদের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে হবে সহনশীলতা। কেন এত রাগ? আছে দুঃখ আছে মৃত্যু , তাহলে কেন রেষারেষি, অন্যকে ছোট করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা?   লোকে কি খাবে , কি পড়বে সেটা ঠিক করার দায় আমার না। কিন্তু রাস্তায় কেউ বিপদে পড়লে তাকে সাহায্য করাটা আমার নৈতিক কর্তব্য বলে মনে করি। সেখানে আমার দায়বদ্ধ তা আছে ।  

No comments:

Post a Comment